মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান- বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গাদের জন্য আতঙ্ক আর সংশয়
মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি উইন মিন্ট ও ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি সহ শাসক দলের শীর্ষ কয়েকজন নেতাকে আটক করে দেশটির সেনা অভ্যুত্থানের পর তা নিয়ে খোদ ওই দেশের চেয়ে বেশি না হলেও কম আলোচনা হচ্ছে না বাংলাদেশে। এই অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত মিয়ামনমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোর চেয়ে বেশি আলোচনায় থাকছে বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা ইস্যু। আর সেটা শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বজুড়েই। এই আলোচনায় রোহিঙ্গা প্রর্তবাসন নিয়ে আশার চেয়ে ভয় আর আশঙ্কার কথাই বেশি উচ্চারিত হচ্ছে।
গত বছর বিরোধীদের পরাজিত করে ক্ষমতায় ফিরেছে আং সান সু চি’র দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি। মায়ানমার সংসদের নিম্নকক্ষের ৪২৫টি আসনের মধ্যে ৩৪৬টিতে জয়ী হয় তারা। কিন্তু, মিডিয়ার খবর রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে শুরু করে একাধিক বিষয়ে বিগত দিনে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় সু চি সরকারের। সেই রেস ধরেই এই অভ্যুত্থান। মিয়ানমারের এই অভ্যুত্থান বড় মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের জন্য। রোহিঙ্গাদের জন্য তো বটেই।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। এরপর একাধিক বৈঠক ও চুক্তির পরও একবারও কথা রাখেনি নাইপিদো। ফিরিয়ে নেয়নি একজন রোহিঙ্গাকেও।
আরও পড়ুন -মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি ও অং সান সু চি আটক
মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি, সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল
ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট নিয়োগ মিয়ানমারে
তবে রোববার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গাকে শিগগিরই ফেরত নেবে মিয়ানমার। কিন্তু পরদিনই (সোমবার) সামরিক বাহিনীর হাতে আটক হন ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট এবং দলের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা। আবারও ক্ষমতার কেন্দ্রে সামরিক জান্তা। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ভবিষ্যৎ নিয়ে।
যদিও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে দুই দেশের সরকারের সাথে আলোচনা হয়েছে কোন ব্যক্তি বিশেষের সাথে নয়। তাই মিয়ানমারের এই উদ্ভূত পরিস্থিতিতেও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া চালিয়ে নেওয়া হবে। ইতিহাসের উদাহরণ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, এর আগেও এই সেনা সরকার অধীনেই প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়েছিল।
কাজেই এই প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা চলছে সেটা কিছু সময়ের জন্য পিছিয়ে গেলেও আটকে যাবে না। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমার সরকার যে অঙ্গীকার করেছে সেটা সেনা সরকার নিশ্চিত করলে প্রত্যাবাসন নিয়ে আর কোন চিন্তা থাকবে না।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের মতে, মিয়ানমারের সঙ্গে প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়েছে। সেখানে কে ক্ষমতায় আছেন তা বিবেচ্য নয়। চুক্তিটি অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
কিন্তু অভ্যুত্থান সু চি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আটক হয়েছেন। সরকারের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে নতুন মানুষকে। তারা যে এই চুক্তি মেনে চলবে সে নিশ্চয়তা কোনোভাবেই দেওয়া যায় না।
কারণ, মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর দেশের চারটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানিয়েছে সেনাবাহিনী। সামরিক বাহিনী থেকে জারি করা এক দীর্ঘ বিবৃতিতে সংবাদমাধ্যমগুলোকে সেটা কথা জানানোও হয়।
মিয়ানমারের ইংরেজি দৈনিক দ্য ইরাবতী প্রতিবেদন থেকে জানায় যায়, চারটি বিষয়ের মধ্যে প্রথমটি, নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন এবং নিয়মানুযায়ী ভোটার তালিকা তদন্ত এবং পর্যালোচনা করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। খবর বিবিসির
এছাড়া তাদের কাছে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সামরিক সরকার যুদ্ধ চালিয়ে যাবে এবং মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বেগবান করা হবে।
দেশজুড়ে যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে কাজ করে যাবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এছাড়া জরুরি অবস্থা শেষে একটি সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করবে সেনাবাহিনী। বিবৃতির কোথাও পররাষ্ট্র বা রোহিঙ্গা বিষয়ে এক শব্দ নেই। অথচ সেদেশের গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডার তালিকায় এই রোহিঙ্গা ইস্যু।
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের ঘটনায়, বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নতুন মোড় নিয়েছে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ঝুলে যাওয়ারও আশঙ্কা করছেন অনেকে। তাই ঢাকাকে জাতীয় স্বার্থেই নাইপিদোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গেই কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর আহ্বান তাদের।
মিয়ানমারে আবারো সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুটি ঝুলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর অবসরপ্রাপ্ত এমদাদুল ইসলাম। তিনি দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গেই কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে।’
এমদাদুল ইসলাম আরো বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে দ্বিতীয় সারিতে রাখবেন। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুটা যেভাবে এগিয়েছিল তা এখন স্থগিত থাকবে। মিয়ানমারে যারাই ক্ষমতায় থাকবে তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। কেননা রোহিঙ্গা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। তাদের বেশিদিন আমাদের ঘাড়ে রাখা যাবে না।
তবে ক্ষমতায় টিকে থাকা ও ভাবমূর্তি উন্নয়নের স্বার্থে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে উদ্যোগী হতে পারে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীও।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন এই বিষয়ে একই টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেছেন, সেনাবাহিনী পরিকল্পিতভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করেছে কারণ তারা একবছরের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। তার মধ্যে দিয়ে তারা তাদের অবস্থানটির পরিমাপ করবে। চাপ সৃষ্টির একটা নতুন ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছে, মিয়ানমার নিজেই করেছে। বাংলাদেশে আশ্রিত ১১ লাখ রোহিঙ্গা যাদের একজনকেও ফেরত নেয়নি তারা এমন হতে পারে তারা নাটকীয় উদ্যোগে এ বিষয়ে এক ধরনের ছাড় দিয়ে রোহিঙ্গা ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়া শুরুরও হতে পারে।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন আরেকটি টিভিকে বলেন, ‘সেনাবাহিনী আসায় রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় বড় কোন প্রভাব পড়বে বলে আমি মনে করি না।’
সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ টেলিফোনে ওই টিভিকে বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে চীন বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। চীন তাদেরকে চাপ দিয়ে আপাতত এই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের একটা পথ বের করা যেতে পারে।’
কিন্তু যাদের নিয়ে এতো কথা সেই রোহিঙ্গারা এই অভ্যুত্থানকে কীভাবে দেখছে? উত্তর হল, তাদের ভয় অনেকগুণ বেড়েছে। বাংলাদেশের রোহিঙ্গারা সামরিক বাহিনী সু চিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরে মিয়ানমারে তাদের থেকে যাওয়া মানুষের জন্য আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের অনেকেই ভাবছেন, মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের কারণে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা হতে পারে। মিয়ানমার সেনাবাহিনী সহজে রোহিঙ্গাদের দেশে ঢুকার সুযোগ দেবে না, কারণ রোহিঙ্গাদের দেশ ত্যাগে এ সেনাবাহিনীই নিপীড়নযজ্ঞের মুল কারিগর ছিল। তারা (সেনাবাহিনী) আবার রোহিঙ্গাদের দেশে ঢোকার সুযোগ দেবে সেটা সহজে বলা যাচ্ছে না।
সু চিকে তারা মন্দের ভালো হিসেবেও দেখত। বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকা একজন রোহিঙ্গা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘তিনি (সু চি) আমাদের জন্য ভালো নন, তবে এখনও আশা ছিল যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে আমরা আমাদের অধিকার অর্জন করতে পারব। এখন মনে হচ্ছে অদূর মেয়াদে মিয়ানমারের কোনও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত নেই।
তিনি আরও বলেছেন, ‘আমরা খুব উদ্বিগ্ন.. মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের কী হতে চলেছে তা নিয়ে আতঙ্কিত।’
এই সেনাবাহিনী মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিয়েছে। রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ করে হত্যা করার পর ঘরবাড়িতে আগুন দিয়েছে। তারা আরাকানের ভূমিকে রোহিঙ্গাশূন্য করতে চেয়েছিল। তারা আবার রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার ঢুকার সুযোগ তৈরি করবে এমনটি আশা করে না রোহিঙ্গারা।
মিয়ানমারে ফেরার ব্যাপারে রোহিঙ্গাদের কিছু শর্ত রয়েছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের নাগিরকত্ব প্রদান ও ভিটেমাটি ফেরত, এ দুটি শর্ত সেনাবাহিনী মেনে নেবে না। আর শর্ত না মান মানেই রোহিঙ্গাদের ফেরার পথ বন্ধ করে দেয়া।
একটি শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বব্যাপী জনগণকে এগিয়ে আসার এবং যেকোনও মূল্যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার আহ্বান জানিয়েছি।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পর ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। নতুন সামরিক জান্তার বৈঠক শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। কিন্তু ভোট কী কিছু পরিবর্তন করতে পারবে?
ফ্রি রোহিঙ্গা জোটের বার্মিজ সমন্বয়ক এবং কম্বোডিয়ায় গণহত্যা ডকুমেন্টেশন সেন্টারের সহযোগী মাওয়াং জুরনি তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সিতে লিখেছেন, নির্বাচন মিয়ানমারের রাজনীতিতে ব্যতিক্রম কিছু ঘটায়নি এটা ঘটাবেও না।
নিজের লেখায় একটি উদাহরণও টেনেছেন তিনি। মিয়ানমারের ভোটের রাজনীতি নিয়ে তিন দশক আগে লেখা এক মার্কিন সাংবাদিকের বিশ্লেষণ তুলে ধরেছেন।
তিন দশক আগে, সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকলের (১ মে ১৯৯০) একটি ৭৩০-শব্দের সংবাদ বিশ্লেষণ কথা উল্লেখ করেন জুরনি। সাংবাদিক জেমস গোল্ডস্টেইনের সেই বিশ্লেষণের শিরোনাম ছিল, ‘ভোট চেঞ্জ নার্থি অর্থাৎ ভোটের কোনও পরিবর্তন হবে না’।
যেখানে বিস্মিত আমেরিকান সাংবাদিক লিখেছিলেন: আপনার যদি কখনও এমন প্রমাণের প্রয়োজন হয় যে, নির্বাচনের মাধ্যমে কোনো আসা সরকার কখনোই তার নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষা করছে না, তাহলে বার্মা হল সেই দেশ। প্রকৃতপক্ষে, ভোট মিয়ানমারে শক্তির সমীকরণের ক্ষেত্রে মৌলিক কিছুই পরিবর্তন করেনি।
আরও পড়ুন
- রাজকীয় খেতাব হারালেন ব্রিটিশ রানীর ছেলে প্রিন্স অ্যন্ড্রু
- তালেবানের ব্যবহারে মুগ্ধ মুক্তি পর সেই শিক্ষক
- প্রেমিক প্রেমিকা এক রশিতে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা
- তালেবানের সরকার ঘোষণা হাসান আখন্দ প্রধানমন্ত্রী বারাদার ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী
- আফগানিস্তানে স্থায়ী সরকার এলে বাংলাদেশ সাহায্যের হাত বাড়াবে
- বন্ধ হচ্ছে ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বেতার সম্প্রচার
- এ বছর মক্কা-মদিনায় তারাবির সালাত ১০ রাকাত পড়ার নির্দেশ
- মিয়ানমারে সেনা অভিযান, নিহত ৮২ প্যাগোডা প্রাঙ্গণে লাশের স্তূপ
- ব্যাপক তোলপাড় ব্রিটিশ রাজপরিবারে, চরম চাপের পর জরুরি বৈঠক
- মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু’ উদ্বোধন করবেন মোদি