সবুজের সমাহার রৌমারীর রোপা আমন ধানের মাঠ

সবুজে,সবুজে ভোরে গেছে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার রোপা আমন ধানের মাঠ। যেদিকেই যতো দূর দুচোখ যায় শুধু সবুজের সমাহার,ফসলের মাঠ যেন সবুজ চাদরে ঢাকা। ঝির ঝিরে বাতাসে সবুজের ঢেউ খেলানো সে দৃশ্যে মুগ্ধ হন সবাই।
কৃষকের আগামীর সোনালী স্বপ্ন লুকিয়ে আছে রোপা আমন ধান ক্ষেতের মাঝে। চারিদিকে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। শরতের রোদ-বৃষ্টির খেলায় সবুজের আভা ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে। ফসলের মাঠের কোথাও ফাঁকা নেই এক খন্ড জমি, যতদূর দৃষ্টি পড়ে সবুজ আর সবুজ, নীল আকাশের সাদা মেঘের ভেলা, যেন সবুজের গাঢ় রঙ্গে একাকার হয়ে পড়েছে,নতুন সাজে সেজেছে বাংলার প্রকৃতি।
মাঠে মাঠে হাওয়ায় দুলছে রোপা আমন ধানের সবুজপাতা, আর আনন্দে দুলছে রৌমারী উপজেলার সকল কৃষকের মন। কৃষকের মনে উঁকি দিচ্ছে এক ভিন্ন আমেজ। সবুজ ঘেরা রোপা আমনের মাঠ দেখে বারবার ফিরে তাকায় কৃষক, থমকে দাঁড়ায় পথিক।
এবার বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই বৃষ্টি না হওয়ায় রোপা আমন লাগাতে কৃষকদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। আষাঢ় মাসের মাঝামাঝিতে আমন ধান চাষ করার নিয়ম থাকলেও বৃষ্টি না হওয়ায় তা পারেননি কৃষকরা। ধান রোপন নিয়ে কৃষক পড়ে বিপাকে। দেরীতে বৃষ্টি হলেও ইতিমধ্যে আমন রোপন লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রোপা আমন ধানের ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, আমন ধানের ক্ষেত প্রকৃতির খেয়ালে গাঢ় সবুজ রং ধারণ করেছে। সবুজে ঘেরা রোপা আমনের মাঠে কৃষক ব্যস্ত সময় পার করছেন। ধানগাছ ভাল রাখতে ও ধানের উৎপাদন বাড়াতে কৃষকরা ক্ষেতের ঘাস পরিষ্কার, সার ও বালাইনাশক ঔষধ প্রয়োগ ও পার্চিংসহ সার্বক্ষণিক পরিচর্যা করছেন এবং সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ায় মেশিনের সাহায্যে সেচও দিচ্ছে ধানের জমিতে।
কয়েক দিনের মধ্যেই ধানের চারাগুলো থেকে বের হবে থোর। আর কিছুদিন পরই কৃষকদের আমন ক্ষেতে বের হবে মৌ মৌ গন্ধ। এর পরই সকলের নজর কাড়বে সোনালি রং এর ধান। সোনালী স্বপ্নে সোনালী ধানে ভরে উঠবে কৃষকের শূন্য গোলা। গৃহিণীর মুখে ফুটে উঠবে হাঁসি।
উপজেলার চর শৌলমারী ইউনিয়নের শান্তির চর গ্রামের কৃষক আফতার হোসেন জানায়, এবার সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ায় প্রথমদিকেই শ্যালো মেশিন দিয়ে জমিতে পানি দিয়ে আমন চারা রোপণ করেছি।
এবং কয়েক দিন পর,পর জমিতে সেচ দিতে
হচ্ছে এতে করে এবার খরচ অনেক বেড়েছে। ডিজেল তেলের দামও অনেক বেশি আবার সারের দামও বেড়েছে অনেক,রোপা আমন ধান খুবি ভালো হয়েছে
কিন্তু যে পরিমান খরচ হয়েছে এতে ধানের খরচ উঠাতে পারবো কিনা চিন্তায় আছি।
উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের চর গয়টা পাড়া গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, যদিও খরার কারনে শ্যালো মেশিন দারা পানি দিয়ে দেরীতে রোপা আমন ধান লাগাইছি। কিন্তু আমন আবাদের জন্য আবহাওয়া ভালো থাকায় ফসল এবার অনেক ভালো হইছে, এবার বেশি রোগ বালাই নেই।
উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আমিনুল ইসলাম (কাজল) ও মিজানুর রহমান মিজান বিভিন্ন মাঠ পরিদর্শন করে এসে বলেন এ বছর রৌমারী উপজেলায় ৮ হাজার ২শ ২৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে গত বছরের চেয়ে এবার অনেক বেশি চাষ হয়েছে।
আমরা মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সময়মত পরামর্শ দিয়ে আসতেছি রোপা আমন ধান ক্ষেতে এবার রোগবালাই অনেক কম।
এবার রোপা আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকরা আশা করছেন।
রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.কাইয়ুম মিয়া বলেন, এবার উপজেলায় ৮ হাজার ২শ ২৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছি এবং কৃষকদের কে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছি।